এই ব্লগে বহুদনি ধরেই কিছু সংখ্যক নারী(?) ব্লগারদের মাঝে একটা trend লক্ষ্য করা যায়: একটা “মুসলিম রমণী”সুলভ নিক নিয়ে, ইসলাম এবং মুসলিমদের সবকিছুকে হেয় প্রতিপন্ন করার এমন নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া – যা কেবল নিকৃষ্ট শ্রেণীর ইসলাম-বিদ্বেষী কাফির বা নাস্তিকরা কোন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়েই করে থাকতে পারে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এসব করে অনেক কিছু হাসিল করা গেলেও, এখানে তাদের প্রাপ্তিটা কি আমি নিশ্চিত নই! আমরা জানি তসলিমা নাসরিন থেকে শুরু করে ইরশাদ মানজী, মরিয়ম নামাজী প্রমুখ – সকলের জীবনে “মুসলিম” নাম নিয়ে প্রকাশ্যে “ইসলাম বিদ্বেষ” প্রমাণ করাতে হার্ভার্ডে ফেলোশিপের মত বিশাল বিশাল সব প্রাপ্তি রয়েছে! কিন্তু যখনই ভাবি সোনাব্লগের মত জামাত-শিবির infested বিশ্বাসীদের ব্লগে তাদের প্রাপ্তি কি হতে পারে? তখনই মনে হয়: হতে পারে এখানে তারা “কিছু পেতে আসেন নি” বরং “কিছু পেয়ে এসেছেন” – অর্থাৎ, বিশ্বাসী মুসলিমদের মাঝে সংশয় বপন করে তাদের অবিশ্বাসী বা সংশয়বাদী বানানোর “কাজ” হাতে নিয়ে তারা এখানে এসেছেন এবং কারো payroll-এ থেকে নিষ্ঠার সাথে সে “কাজ” করে চলেছেন।

বিলকিস, বেগম, এলিজাবেথ, হেলেনা ইত্যাদি বাহারী মেয়েলী “নিক” আসলে কি বহুজনের না একজনেরই, তা নিয়েও অনেকের সন্দেহ রয়েছে। যাহোক, সোনাব্লগের ইসলাম বিদ্বেষী রমণীদের তালিকায় সর্ব সাম্প্রতিক একজন হচ্ছেন “হেলেনা” ওরফে “হেলেনারা”। আজ তার একটা পোস্ট ( http://www.sonarbangladesh.com/blog/helenara/116102 ) এসেছে, “নাস্তিক চীনের প্রথমবারের মতো সফল স্পেস ডকিং……..” – এই শিরোনামে। সেখানে তিনি লিখেছেন: “আমরা মুসলমানরা এখনো একজন ইবনে সিনা কবিরাজের কম্বল জড়িয়ে বিজ্ঞানের তুড়ি বাজাই আর অন্য কে জ্ঞানদান করি। অথচ নিজেদের প্রপ্তি শুন্য। অন্যদিকে সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী গনচীন শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাছ্ছে।” (ভুল বানানগুলোও কিন্তু তার, আমার নয়!!)

আমার এই পোস্টটা তার লেখার সূত্র ধরে হলেও, তাকে নিয়ে নয়। আমার কথাগুলো সবার চিন্তা-ভাবনার জন্য। কার কতটুকু “অগ্রগতি” হলো বা না হলো এসব বিতর্কে যাবার আগে, জীবনের কোন purpose আছে কি না? – সেটা হচ্ছে সব চেয়ে প্রথম জিজ্ঞাস্য ও বিবেচ্য বিষয়। যদি না থাকে তবে, ভবিষ্যৎ (অদূর অথবা সুদূর) নিয়ে ভাবাটাই বোকামী – সময়টা ঐ খাতে ব্যয় না করে “নগদ যা পাও হাত পেতে নাও, বাকীর থাতায় শূন্য থাক” – এই দর্শন থেকে যত ধরনের Hedonistic Pleasure আছে, তার সব উপভোগ করার চেষ্টা করা উচিত। কারণ, আমার মৃত্যুর আগেই আমার যা কিছু ভালো লাগে, আমার উচিত তা maximum করার ও পাওয়ার চেষ্টা করা । সেখানে “অগ্রগতি” অথবা “পশ্চাদপদ” এই conceptগুলোই meaningless । আমি মরে গেলে পৃথিবী কোথায় গেল তাতে আমার কি আসে যায়? – এটা হচ্ছে মোটামুটিভাবে কাফির, মুশরিক, নাস্তিক ও সংশয়বাদীদের দর্শন। সেজন্যই সারা পৃথিবী ও তার ভবিষ্যৎ গোল্লায় গেলেও মার্কিনীরা Industrial Emission (কল-কারখানা থেকে নিঃসৃত গ্যাস) কমাতে নারাজ!

এবার আসুন অন্য দিকটায় – যদি, জীবনের কোন purpose থেকে থাকে – তাহলে, “ভবিষ্যৎ” বা “অগ্রগতি” এসব নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা কি হবে? “জীবনের কোন purpose রয়েছে”– এই কথার ভিতরই প্রোথিত রয়েছে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের স্বীকৃতি – কারণ purpose থাকা মানেই হচ্ছে এর পেছনে কারো হাত রয়েছে – planner, designer, creator….and so on! (আরেকভাবে বলতে পারতাম যে, কেবল কোন বিশ্বাসীরাই মনে করবে যে জীবনের কোন purpose রয়েছে।)তাহলে সবচেয়ে আগে জেনে নেয়া উচিত: তিনি কি purpose-এ আমাদের সৃষ্টি করেছেন? সেই purpose-টা fulfill করার দিকে আমরা যদি এগিয়ে যেতে পারি তবেই সেটা “অগ্রগতি”, আর যা কিছু আমাদের সেই purpose fulfill করা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়, তাই আমাদের জন্য “পশ্চাদ-গতি”! একটা উদাহরণ দিচ্ছি – আপনি বা যে কেউ একটা গাড়ী কিনেন/কিনে কেন? A থেকে B-তে যাবার জন্য – তাই তো? অন্যভাবে বললে একটা গাড়ীর purpose হচ্ছে আমাদের A থেকে B-তে নিয়ে যাওয়া। এখন ধরুন কেউ আপনাকে বললো যে, একটা গাড়ীর এ.সি.টা খুব উন্নত শ্রেণীর, তার সবকিছু অটোমেটিক, টায়ারগুলো রেডিয়াল ও সর্বাধুনিক ইত্যাদি – কিন্তু সবশেষে শুনলেন যে, গাড়ীটা চলে না বা কখনো চলবেও না – তখন কি আর আপনার মনে হবে যে, গাড়ীটি খুব উন্নত বা আধুনিক? – না!! কারণ, ঐ গাড়ীটা তার existence-এর purpose fulfill করতে ব্যর্থ হয়েছে – তার মাঝে আর কোন “উন্নতি” বা “অগ্রগতি” বা “আধুনিকতা”র দাবী অর্থহীন!

আমাদের সৃষ্টির purpose কি? কে তা সবচেয়ে ভালো জানার কথা?? নিশ্চয় আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা সবচেয়ে ভালো জানবেন!! আমাদের আল্লাহ্ কেবল একটা মাত্র purpose-এ সৃষ্টি করেছেন: তাঁর ইবাদত করার জন্য (কুর’আন, ৫১:৫৬)। এখন, যা কিছু আমাদের বেশী বেশী করে তাঁর ইবাদতের দিকে নিয়ে যাবে সেটাই আমাদের জন্য উন্নতি, অগ্রগতি এবং development – আর যা কিছু আমাদের তাঁর ইবাদত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবে, তাই আমাদের জন্য “ধ্বংসের পথ”, “পশ্চাদ-গতি” এবং counter-development। জীবনের purposeবিহীন উন্নতির চেষ্টায় চীনের মত দেশের বিশ্বায়ন ও বেশ্যায়ন কাফির-মুশরিকদের কাছে লোভনীয় মনে হলেও মুসলিমদের কাছে তা হবার নয়। মুসলিমদের কাছে যে কোন উন্নতির হাতছানিই শর্ত-সাপেক্ষ হবে – তা কি তাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য সাধনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না – সেই বিবেচনাটা অবশ্যই সর্বাগ্র আসতে হবে!! Development just for the sake of development অথবা economic growth just for the sake of growth – এই ধারণাগুলো সত্যিকার বিশ্বাসী মুসলিমদের জীবনে অর্থহীন।

সবশেষে আসুন জীবনের purpose নিয়ে একটা সুন্দর ভিডিও শেয়ার করা যাক:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *