ইসলামী worldview

ইসলামী worldview

...আমরা সমুদ্রগামী নাবিকরা যদি মনে করি যে, আমরা জাহাজ নিয়ে যুক্তরাজ্যের উপকূলে যাবো, তাহলে আমরা হাতের কাছে যুক্তরাজ্যের উপকূলের চার্ট* রাখবো - আবার যদি মনে করি যে, আমরা আলাস্কার উপকূলে যাবো তবে নিশ্চয়ই আলাস্কা উপকূলের চার্ট রাখবো! কিন্তু এমন যদি হয় যে, আমি আলাস্কা উপকূলের চার্ট সংগ্রহ করেছি, অথচ মুখে বলছি যে, আমি আসলে যুক্তরাজ্যে যেতে চাই - তাহলে ব্যাপারটা কি অসঙ্গত মনে হবে তাই না? এখানে যেমন আপনি যে গন্তব্যে যেতে চাইবেন সেই গন্তব্যেরই চার্ট যোগাড় করাটাই সুস্থ মস্তিষ্কের পরিচায়ক, জীবনের বেলায়ও আপনার belief system অনুযায়ীই আপনার worldview হবে...
সমুদ্রে জীবন – ১৬

সমুদ্রে জীবন – ১৬

..এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসে "বিগ-ম্যাক" খেতে খেতে আর কেউ ভাববেন না যে, বাবা জিনিসটা খেতে কত ভালোবাসতেন! অথবা, ৩০০০ সিসির গাড়ী চালিয়ে সিডনী থেকে ব্রিসবেন যেতে যেতে মা যে "বলাকা সার্ভিস"-এ গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসেন, তাতেও কারো অস্বস্তি লাগবে না! মহসমুদ্রের ওপার থেকে কারো সাথে এসব শেয়ার করার ভাবনা যে অবাস্তব কল্পনাবিলাস তা সবারই জানা - তাই এসব কারণে বিষন্নতার অবতারণা ঘটবে না বরং "যেখানে যা স্বাভাবিক" সেটা মেনে নেয়াই rational মনে হবে। মা-বাবাও কিছুদিন পর পর পাঠানো ছবির মাঝে যখন ছেলের একতালা বাংলো টাইপের বাড়ীর লনে কুকুরকে জড়িয়ে ধরে তোলা নাতির ছবি দেখবেন...
ফাস্টফুড কালচার

ফাস্টফুড কালচার

..অক্টোপাসের যেমন অনেক কয়টি শুঁড় বা tentacles রয়েছে, তেমনি কুফরের যে দানব মুসলিম উম্মাহকে আজ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে এবং ক্রমাগত নিষ্পেষিত করে চলেছে, তারও অনেক টি শুঁড় রয়েছে বহু শুঁড় বিশিষ্ট কুফরের এই দানবকে আসলে হত্যা করে সম্পূর্ণ পরাজিত করতে হবে - তা না হলে এর একটি শুঁড়কে কেটে, এর কাছ থেকে মুক্তি পাবার কোন উপায় নেই। তবু আমি চেষ্টা করেছি ‘কুফরি-কালচারের’ বহুমাত্রার বিপদের একটি বিপদকে অন্তত পাঠকের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে। আমি জানি আপনি ‘আকাশ-সংস্কৃতির’ আগ্রাসনের বিহিত না করে, কেবল “ফাস্টফুড কালচার” ত্যাগ করে বেশীদূর অগ্রসর হতে পারবেন না...

আমাদের নিঃসঙ্গতা – শেষ পর্ব

[Disclaimer:এই লেখাটা মুসলিম perspective থেকে লেখা - তাই সবার ভালো নাও লাগতে পারে] আপাত বিচারে তরুণ প্রজন্মের ভালো মুসলিম ও মুসলিমাহ্ ভাইবোনরা ব্লগে তাদের জীবনের অনেক অমূল্য সময় অর্থহীন কথকতায় কাটিয়ে দিচ্ছেন - যা দেখলে আমার হৃদয়ে সত্যিই রক্তক্ষরণ হয়। কেউ আমাকে বলতেই পারেন:"ওদের বয়সে আপনি কি করেছেন তার ঠিক আছে?" একদম সত্যি কথা! আর কেউ যদি আরো একটু এগিয়ে গিয়ে গণতন্ত্রের এই দেশে, "আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশী তাকে দেবো" স্টাইলে বলেন, "আমাদের জীবনের সময় আমরা নষ্ট করবো, তাতে আপনার কি?" - তাহলে তো আর কথাই নেই! তবু বলছি, "আর্সেনিক-যুক্ত পানি" ব্যবহারে একজনের হাত-পা ক্ষয়ে গিয়েছে - আমার জন্য "আর্সেনিক-যুক্ত পানি" এড়িয়ে চলার জন্য, সেটাই যথেষ্ট হওয়া উচিত। আমি যদি আবার "আর্সেনিক-যুক্ত পানি" ব্যবহার করে দেখতে চাই যে, সত্যিই আমারো হাত-পা নষ্ট হয় কি না - তবে সেটা নিঃসন্দেহে বোকামী বলেই গণ্য হবে। আমার জীবনের অমূল্য সময় কাজে লাগে নি, সেটাই আপনার জীবনের সময় আল্লাহর পথে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিতে ব্যয় করার প্রেরণা হোক! এই সিরিজের লেখাগুলো মূলত বিশ্বাসী মুসলিম ভাইবোনেদর এই সত্য সম্বন্ধে সচেতন করতে লেখা যে, আড্ডা দিয়ে আর ব্লগর-ব্লগর করে কাটিয়ে দেবার জন্য তাদের জীবন নয়! বরং জীবনের হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি মুহূর্তই হয় আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজে ব্যয় করলাম, না হয় অপচয় করলাম - মাঝামাঝি কিছু হবার নয়। (more…)

বলুন তো এটা কোন দেশ – শেষ অধ্যায়(২)

[এর আগের পর্বটা রয়েছে এখানে:  বলুন তো এটা কোন দেশ – শেষ অধ্যায়(১) ] লেখাটা যখন শুরু করি, তখন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে কথা বলবো তা ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি। তবু, কথায় কথায় অনেক কথা বলা হয়ে গেলো! চলুন, আবার আরবদেশের প্রসঙ্গে ফিরে যাই। আরবদেশ সম্বন্ধে আমি তেমন খারাপ কিছুই বললাম না। প্রশ্ন থেকে যায়: আরবদেশ থেকে তাহলে ইথারে এত Bad News ভেসে/বয়ে আসে কেন? “যাহা রটে, তাহা কিছুটা বটে” সেটাতো রয়েছেই – আর কোথাও কি কোন information gap থেকে যায় তাহলে? এই ব্যাপারে, নিজে এই ব্লগের ব্লগার নন - এমন একজন মুসলিমাহ্ আগেই তার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন নীচে লিংক দেয়া দু’টি পর্বে:   আমি Bad News-এর কারণ হিসাবে কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করতে চাই: ১) প্রচার প্রচারণায় মুসলিমরা সব সময় খারাপ হবারই কথা – প্রচার, প্রপাগান্ডা, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি সঙ্গত কারণেই ইসলামের সাথে ঠিক যায় না! (more…)

বলুন তো এটা কোন দেশ – শেষ অধ্যায়(১)

[এই সিরিজের আগের দু'টি পোস্ট রয়েছে এখানে: এই সিরিজের আগের দু'টো পোস্টে আমি হয়তো কারো কারো ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়েছি - সে জন্য দুঃখিত। ইচ্ছা করেই সবার আগ্রহ বাড়াতে চেয়েছিলাম - তাতে ঘটনাটা, আর সৌদী আরব দেশটাকে হয়তো অনেক দিন মনে থাকবে। কেউ কেউ হয়তো নতুন করে দেশটাকে মূল্যায়ন করবেন - জানতে চাইবেন! বিশ্বাসী মুসলিমদের জন্য দেশটা না না কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ - অথচ, আমরা দেশটা সম্বন্ধে বলতে গেলে কিছুই জানি না - যা জানি তাও ভুলে ভরা। (more…)

বলুন তো এটা কোন দেশ – ২

[এই ছোট্ট ব্যাপার নিয়ে দু'টো পোস্টের প্রয়োজন ছিল না. কিন্তু প্রথম পোস্টে কিছুতেই আর ছবি যোগ করা গেল না। কেন বুঝলাম না! হয়তো আমার ছবিগুলোর সাইজ বড় - সে জন্য (একেকটা 2MB-রও বেশী)। তাই ২ ভাগে ভাগ করতে হলো। আগের পোস্টটা রয়েছে এখানে: বলুন তো এটা কোন দেশ – ১ ] একসময় যখন নিয়মিত ব্লগিং করতাম, তখন আপনাদের অনেক দেশের গল্প শুনিয়েছি, সমুদ্রের গল্প শুনিয়েছি। এখনো "সমুদ্রে জীবন" নামের ঐ সিরিজটার ১-১৮ পর্বগুলো এই ব্লগে রয়েছে। কেউ চাইলে দেখতে পারেন। ব্লগিং একপ্রকার ছেড়ে দিলেও, কয়েকবারই ভেবেছি "সমুদ্রে জীবন" সিরিজটার আরো কয়েকটি পর্ব হয়তো লেখা বা পোস্ট করা যায়। .... আজ আপনাদের এমন একটা দেশের কিছু ছবি দেখাবো যেখানে আমি গত শীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। দেশটির অনেক ক’টি সমুদ্রবন্দর থাকলেও এবং সেসবের কয়েকটিতে জাহাজে করে গিয়ে থাকলেও, ব্যস্ততার কারণে বা সময় স্বল্পতার কারণে সে দেশে তখন ঘুরে বেড়ানো হয়নি। এবার গিয়ে তাই ইচ্ছামত ঘুরে বেড়িয়েছি। ছবিগুলো দেখে আপনাদের দেশের নামটা আন্দাজ করতে বলবো! দেখুন তো আপনার অনুমান সত্যি হয় কি না! (more…)
বলুন তো এটা কোন দেশ – ১

বলুন তো এটা কোন দেশ – ১

একসময় যখন নিয়মিত ব্লগিং করতাম, তখন আপনাদের অনেক দেশের গল্প শুনিয়েছি, সমুদ্রের গল্প শুনিয়েছি। এখনো "সমুদ্রে জীবন" নামের ঐ সিরিজটার ১-১৮ পর্বগুলো এই ব্লগে রয়েছে। কেউ চাইলে দেখতে পারেন। ব্লগিং একপ্রকার ছেড়ে দিলেও, কয়েকবারই ভেবেছি "সমুদ্রে জীবন" সিরিজটার আরো কয়েকটি পর্ব হয়তো লেখা বা পোস্ট করা যায়। .... আজ আপনাদের এমন একটা দেশের কিছু ছবি দেখাবো যেখানে আমি গত শীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। দেশটির অনেক ক’টি সমুদ্রবন্দর থাকলেও এবং সেসবের কয়েকটিতে জাহাজে করে গিয়ে থাকলেও, ব্যস্ততার কারণে বা সময় স্বল্পতার কারণে সে দেশে তখন ঘুরে বেড়ানো হয়নি। এবার গিয়ে তাই ইচ্ছামত ঘুরে বেড়িয়েছি। ছবিগুলো দেখে আপনাদের দেশের নামটা আন্দাজ করতে বলবো! দেখুন তো আপনার অনুমান সত্যি হয় কি না! (more…)

বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম বক্তৃতার একটি

ব্লগিং প্রায় ছেড়েই দিয়েছি অনেকদিন। কেন? এই প্রশ্নের সবচেয়ে সৎ ও সংক্ষিপ্ত উত্তর হবে: “ভালো লাগে না!”। তবু, সময় পেলে কখনো সখনো আগে যে ব্লগগুলোতে লিখতাম, সেগুলোতে একটা “চক্কর” দিয়ে যাই। আজ সেভাবেই একটা ব্লগে “চক্কর” দিতে গিয়ে একটা লেখা চোখে পড়লো: Best Speech Ever । লেখক যা বলতে চেয়েছেন, তা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু এরকম একটা শিরোনাম দেখলে অনেকেই হয়তো আশা করবেন যে, ইতিহাসের পাতার শীর্ষে যাঁরা স্থান করে নিয়েছেন, তাদের কারো কোন বক্তৃতা হয়তো থাকবে ঐ লেখায়। তবে পড়তে গিয়ে দেখা যাবে একটা “চুটকি” বা “জোক” রয়েছে সেখানে। আবারও,.. লেখকের ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। তবে শিরোনামের শুরুতে একটা “The” বসতে পারতো – তাতে হয়তো শিরোনামটা আরো সুন্দর হতো – ব্যস এটুকুই বলার আছে। (more…)

সাফারী

আমাদের দেশটা ক্রমেই একটা সাফারীতে পরিণত হচ্ছে কালাহারি, সেরেনগেটির মত সাফারী - যেখানে বাঘ, সিংহ, হায়না, গন্ডারেরা মুক্ত স্বাধীন ঘুরে বেড়ায় যখন তখন একে অপরকে ধাওয়া করে, ছিঁড়ে কুটে খায়, হত্যা করে। যেখানে নিয়মহীনতাই নিয়ম, যেখানে আইনশূন্যতাই আইন! আমাদের দেশটা একটা সাফারী হতে চলেছে (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১৮

সমুদ্রে জীবন – ১৮

[গত পর্বে আপনাদের এই জাহাজটার গল্প বলেছিলাম] [গত পর্ব, “সমুদ্রে জীবন - ১৭”-তে যে জাহাজটার গল্প বলতে শুরু করেছিলাম - এবারের পর্বটাও সেই জাহাজেরই অসমাপ্ত গল্পের ধারাবাহিক বর্ণনা। যারা গত পর্বটা পড়েন নি, তাদের প্রতি আন্তরিক অনুরোধ, এই পর্ব পড়ার আগে, কষ্ট করে গত পর্বটা পড়ে নেবেন, ইনশা’আল্লাহ্!( যা এখানে রয়েছে: সমুদ্রে জীবন – ১৭ ) ] mariner77_1345654363_1-1225617308ivory জাহাজে পা রেখে মনে হলো একটা মৃত নগরী - আমাদের এদিককার জাহাজগুলো বন্দরে আসলে দারুণ রকমের একটা প্রাণ-চাঞ্চল্য দেখা যায় - এখানে সেই প্রাণের স্পন্দনটা একেবারেই অনুপস্থিত মনে হলো। আমাদের সাথে ওদের জীবনযাত্রার পার্থক্য বোঝার পর্বের সূচনা হলো এভাবেই! আমাকে ঐ জাহাজে আমার ডিপার্টমেন্টের শীর্ষব্যক্তির অফিসে, তার কাছে, নিয়ে যাওয়া হলো - যার কাছ থেকে আমার জাহাজ takeover করার কথা। (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১৭

সমুদ্রে জীবন – ১৭

যে জাহাজটির গল্প নীচে বলা হয়েছে, এটা তারই একটা ছবি। খুব সম্ভবত দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান/পুসান-এর আশেপশে কোথাও ছবিটি তোলা হয়েছে। mariner77_1341768001_1-shp [এর ঠিক আগের র্পবটা রয়েছে এখানে: সমুদ্রে জীবন – ১৬] "সমুদ্রে জীবন" সিরিজটায় আসলে তেমন কোন ধারাবাহিকতার ব্যাপার নেই, প্রয়োজনও নেই তেমন - কখনো হয়তো একটা পর্বে বর্ণিত ঘটনাগুলোর পরবর্তী ঘটনাগুলো ঠিক পরের পর্বেই চলে এসেছে; আবার কখনো হয়তো পর পর লেখা দু'টো পর্বের ঘটনাগুলোর সময়ের ব্যবধান ছিল ৫ বৎসর। তবে পর্বগুলিতে বর্ণিত ঘটনা বা অভিজ্ঞতাগুলো সব আমার নিজের জীবনের - এটাই বিভিন্ন পর্বের ঘটনা বা অভিজ্ঞতার মাঝের প্রধান যোগসূত্র। যাহোক, গত পর্বটা (সমুদ্রে জীবন - ১৬) ছিল একটু অন্য ধরনের - যে জন্য ঐ পর্বের শুরুতে আমি বলেছি যে, ঐ পর্বের শিরোনামটা "সমুদ্রে জীবন" না হয়ে বরং "সমুদ্রগামীদের জীবন" হলে হয়তো যথার্থ হতো! ঐ পর্বটা পড়ে, এক ভাই বার্তায় আমাকে আরেকজন ব্লগারের একটা পোস্ট দেখতে বললেন এই বলে যে, তার মতে ঐ পোস্টকে আমার পোস্টের একপ্রকার anti-theses বলা যায়। (more…)
মরুর প্রাচীর পেরিয়ে – ২: একজন সৌদী প্রবাসী মুসলিমাহর উপলব্ধি

মরুর প্রাচীর পেরিয়ে – ২: একজন সৌদী প্রবাসী মুসলিমাহর উপলব্ধি

[আমাদের একটা ছোট্ট ই-মেইল গ্রুপ আছে - যার সদস্যরা নিজেদের মাঝে ইসলাম নিয়ে লেখালেখি share করে থাকেন। সৌদী আরবে থাকেন এমন একজন তরুণী মুসলিমাহ্, তার একটা বাংলা লেখার ২য় পর্বটা কাল ঐ গ্রুপে দিয়েছেন। প্রথম পর্বটা আগেই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি ( https://marinerbd.wordpress.com/2015/10/24/মরুর-প্রাচীর-পেরিয়ে-একজন/) । ভাবলাম ২য় পর্বটাও আপনাদের সাথে শেয়ার করি।] মূল লেখা: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সৌদি আরবে সাধারণ মানুষদের জীবনযাত্রা নিয়ে যখন প্রথমবার লিখতে বসি, আমার উদ্দেশ্য ছিল ওদের নিয়ে মানুষের মনে যে ভুল ধারণা আছে, তা যেন একটু হলেও বদলায় - তার চেষ্টা করা। সেই সাথে এই ভয়ও ছিল যে, অনেকেই হয়ত লেখাটি সহজভাবে নিতে পারবেন না - স্বাভাবিক ভাবেই আমরা যদি আজীবন ভুল তথ্য জেনে বড় হই, হঠাৎ কেউ সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বললে মেনে নেয়া তো সহজ নয়। তাই আমি কিছুটা ভীত ছিলাম লেখার সময়। আবর এমনও ভয় ছিল যে কেউ ভাবতে পারেন, এসব লেখার আড়ালে হয়ত কোন ব্যক্তিগত ফায়দা রয়েছে। হয়ত বা সেকারণেই আরও অনেক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা লেখা হয়নি। তাই আমার দেখা এদেশের আরও কিছু ‘অজানা’ দিক তুলে ধরছি এখানে। (more…)
মরুর প্রাচীর পেরিয়ে – একজন সৌদী প্রবাসী মুসলিমাহর উপলব্ধি

মরুর প্রাচীর পেরিয়ে – একজন সৌদী প্রবাসী মুসলিমাহর উপলব্ধি

[আমাদের একটা ছোট্ট ই-মেইল গ্রুপ আছে - যার সদস্যরা নিজেদের মাঝে ইসলাম নিয়ে লেখালেখি share করেন। সৌদী আরবে থাকেন এমন একজন তরুণী মুসলিমাহ্ আজ ঐ গ্রুপে একটা বাংলা লেখা দিয়েছেন। আমার পড়ে ভালো লাগলো - ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি।] মূল লেখা: সৌদি আরব নিয়ে জনসাধারণের ধারণা একটু অদ্ভুত। কেউ ভাবেন এখানে লোকে হাইওয়েতে চলাচল করে উটের পিঠে চড়ে। কেউ ভাবেন এখানকার লোকগুলো সব বেদুইন। দেশ থেকে হজ্জ বা উমরা করতে এসে এখানকার দোকানপাট দেখে যখন সবার মাথা ঘুরে যায়, খুব অবাক লাগে আমার--- এদেশটাকে মনেহয় লোকে under developed বলে ধরেই এখানে আসে। একবার দাহরান এর King Fahad University তে আমেরিকা থেকে একজন ভারতীয় হিন্দু প্রফেসর এলেন ট্রেনিং দিতে। ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস এর ঢুকে উনি বিশ্বাস এ করতে পারছিলেন না যে এটা সৌদি আরব--- সম্ভবত তিনি আশা করছিলেন উন্নত বিল্ডিং এ না, তাঁবুতে থাকে সকলে। আবার একদল মানুষ আছেন যারা সৌদি আরব এর সচ্ছলতার কথা বড় বেশী ভালভাবে জানেন। তাঁরা এখানে আসেন সেই উদ্দেশ্য নিয়েই--- দিনের পর দিন এখানে থাকেন, এখানকার সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে দেশে ফিরে আবার এদেশেরই বদনাম করেন। খুব কম মানুষই এই মরুভূমির দেশটির অসাধারণ সুন্দর দিকটি দেখতে পান অথবা দেখতে চান। (more…)

হে ঘাতক!

[এই পর্বের প্রথম প্রচেষ্টা রয়েছে এখানে: https://marinerbd.wordpress.com/2015/10/22/হে-ঘাতক/ হে ঘাতক! ভেবো না তুমি আমায় কথার মায়াজালে ভুলিয়ে রাখবে। আমি ঠিকই আমার ভাইয়ের প্রতি বিন্দু রক্তের বদলা চাইবো - চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, নাকের বদলে নাক। তা সে যতদনিই লাগুক! ভেবো না তুমি জনতার একজন হয়ে যাবে- সময়ের ব্যাবধানে, মিশে যাবে আর সকলের সাথে, সকলের মাঝে। ঘাতক! আর হুকুমের আসামী ছায়া-ঘাতক!! হ্যাঁ তোমাকেও বলছি, শুনে রাখো: ভেবো না আমার ভাইয়ের সমাধিতে ফুল দিলেই আমি ভুলে যাবো সব! আর অনায়াসে তুমি আমার ভাই-বন্ধু কিছু হয়ে যাবে!! দাবার ছকে বড়ে আর মন্ত্রী এক নয়, কিস্তি…continue reading →

দিবস দিয়ে কি ভালোবাসা হয়!

দিবস দিয়ে কি ভালোবাসা হয়, নাকি ভালোবাসার কোন দিবস হয়! তাহলে সবাই ঐ এক দিবসের আয়ুই চাইতো - এক জীবনের নয়। খুঁজে পেতে কি ভালোবাসা হয়? তাহলে অনেকেই “হিলারী-তেনজিং” হয়ে এভারেস্টে যেতেও রাজী হতো - প্রেম ভালোবাসা বয়ে নিয়ে আসতে। ভালোবাসা কি ফুলের তোড়া বা কাঁচের বাক্সে সাজানো কোন কেক/চকোলেট ? অথবা বিজ্ঞাপনের কোন পণ্য, যা পয়সা থাকলেই যে কারো হতে পারে? তাহলে তো “বিল-গেটস” আর "সরোস”রাই পৃথিবীর সব ভালোবাসা কিনে নিতো! আর কারও জন্য কি একফোঁটা ভালোবাসা কোথাও পাবার উপায় থাকতো? ভালোবাসা তাহলে ফুল নয়, কেক নয়, অযথা কথার ফুলঝুরিও নয় অশ্লীল…continue reading →

ইসলামের দৃষ্টিতে “ভ্যালেন্টাইন’স ডে” বা “ভালবাসা দিবস”

ইসলামের দৃষ্টিতে "ভ্যালেন্টাইন’স ডে” বা "ভালবাসা দিবস” সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি ও কল্যাণ বর্ষিত হোক তাঁর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এঁর ওপর, তাঁর পরিবার এবং সাহাবীগণের ওপর, এবং সেই সকল লোকদের ওপর, কিয়ামত পর্যন্ত যারা সত্যের পথ অনুসরণ করবে ৷ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন বা জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে বাছাই করেছেন এবং তিনি অন্য কোন জীবন-ব্যবস্থা কখনও গ্রহণ করবেন না, তিনি বলেন: "এবং যে কেউই ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন-ব্যবস্থা আকাঙ্খা করবে, তা কখনোই তার নিকট হতে গ্রহণ করা হবে না, এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ৷” (সূরা আলে ইমরান, ৩:৮৫) এবং নবী(সা.) বলেছেন, এই উম্মাতের মধ্যে কিছু লোক বিভিন্ন ইবাদতের প্রক্রিয়া ও সামাজিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে আল্লাহর শত্রুদের অনুসরণ করবে ৷ আবু সাঈদ আল খুদরী(রা.) বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেন: (more…)

ঘৃণার সুনামী

পৃথিবীর মানচিত্র থেকে, তোমার মুছে যাওয়াই যদি আমার অস্তিত্বের একমাত্র শর্ত হয় - তবে তাই হোক, আমি তাই চাইবো। আমার মানচিত্র টিকিয়ে রাখতে, তোমার মানচিত্রের ছিন্ন-ভিন্ন হওয়া যদি অপরিহার্য ও অনিবার্য হয়, তবে তাই হোক, আমি তাই চাইবো। (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১৫

সমুদ্রে জীবন – ১৫

[এই সিরিজের একটা লেখা অনেকদিন পরে পোস্ট করা হলো। কেউ চাইলে এর ঠিক আগের লেখাটা এখানে দেখতে পাবেন: উপরে যে জাহাজের ছবিটা দেয়া আছে, ঐ জাহাজে করে যাত্রার বর্ণানাই নীচে আপনাদের সাথে শেয়ার করা হলো !] ৯/১১-র পর পর আমি যে জাহাজে জয়েন করি, সেই জাহাজটা চলতো Singapore - Jebel Ali (Dubai) - Fujairah - Navashiva (Bombay) - Singapore এই loop-এ। হঠাৎই খবর আসলো আমাদের রুট বদলে যাচ্ছে এবং আমরা US route-এ যাচ্ছি। মালোয়েশিয়া ততদিনে কি একটা বেয়াদবী যেন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে - আমার একদম বিশদ মনে নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান আক্রমণ নিয়ে, কি যেন বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন সে দেশের শীর্ষ-স্থানীয় নেতারা। তাতেই যুক্তরাষ্ট্র, মালোয়েশিয়ার উপর খুব ক্ষ্যাপা। শোনা যাচ্ছিল: কোন জাহাজে মালোয়েশিয়ান বা পাকিস্তানী শীর্ষ-স্থানীয় অফিসার থাকলে, সেই জাহাজকে কখনো বন্দরে (বিশেষত নিউ ইয়র্কের মত বন্দরে) ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না - আবার কখনো বন্দরে ঢুকতে দেয়া হলেও জাহাজের কাউকেই "shore leave" দেয়া হচ্ছে না অর্থাৎ মাটিতে পা রাখতে দেয়া হচ্ছে না - জাহাজের 'port-hole' দিয়ে মাটি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। (more…)
সমুদ্রে জীবন – ১৪

সমুদ্রে জীবন – ১৪

তেরোটি পর্ব লেখার পর আমি সঙ্গত কিছু কারণে সিরিজটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম - যার একটি ছিল আমার ব্লগিং-এর উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুতি। অনেকেই সিরিজটার কথা এখন হয়তো ভুলে গিয়ে থাকবেন, আর তাই সেটাকে ঘিরে যে "বিনোদনের" পরিবেশ গড়ে উঠেছিল তার রেশও এখন হয়তো কেটে গিয়ে থাকবে, ইনশা'আল্লাহ্! তাই আমার ব্লগিং-এর উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে আবার সিরিজটা শুরু করার চিন্তা করলাম। ভেবেছিলাম ইউরোপের কথা এখন আর বলবো না! তবু অন্য একটা প্রসঙ্গে মনে হলো আরেকটু বলে নিই - পরে না হয় ধারাবাহিকতায় ফিরে যাওয়া যাবে - যদিও এখন যে কেবলই ইউরোপের কথা আসবে তা নয়। ৯/১১ পর থেকে সারা বিশ্বে মুসলিমদের অবস্থা ও অবস্থানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। যারা একটা মুসলিম দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন, তাদের জীবনেও যে নানাবিধ পরিবর্তন এসেছে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু মুসলিম নাবিক - বিশেষত যারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ান, তাদের না বুঝে উপায় ছিল না যে, পৃথিবীতে যুগান্তকারী একটা প্রলয়কান্ড ঘটে গেছে! (more…)