প্রতিষ্ঠিত ইবাদতের শর্তের বিপক্ষে “কুর’আন অনলিদের” অবস্থান
১৪০০ বছরের সকল মূলধারা স্কলাররা একমত যে, ঈমান আনার পর ইবাদত কবুলের ২ টি প্রধান শর্ত হচ্ছে:
১) ইবাদত কেবল আল্লাহর জন্য নিবেদিত হতে হবে।
২) ইবাদত রাসূল(সা.)-এঁর দেখিয়ে দেয়া পদ্ধতিতে করতে হবে।
কিন্তু “কুর’আন অনলি”-রা বলে যে, দ্বিতীয়টি নাকি ভিত্তিহীন। নীচে দেয়া আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, দ্বীনের সকল ব্যাপারে রাসূল (সা.)-এঁর আদেশ/নিষেধ আমাদের জন্য শিরোধার্য – তাঁর অনুসরণ ও আনুগত্য করা আমাদের জন্য ফরজ এবং আমাদের ঈমানের শর্ত।
1. Say: “If ye do love Allah, follow me: Allah will love you and forgive you your sins; for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.” Say: “Obey Allah and His Messenger”: but if they turn back, Allah loveth not those who reject Faith. [3:31-32]
উপরের আয়াতে, যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের (সা.) দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে – তাকে আল্লাহ্ অবিশ্বাসী বলেছেন।
2. (We sent them) with Clear Signs and Scriptures and We have sent down unto thee (also) the Message; that thou mayest explain clearly to men what is sent for them, and that they may give thought. [16:44]
উপরের আয়াতে আল্লাহ্ রাসূলকে (সা.) অহীর ব্যাখ্যাকারী বলেছেন – আর কে না জানে আল্লাহ্ মানুষকে যেহেতু কেবল তাঁর ইবাদতের জন্যই বানিয়েছেন (৫১:৫৬) – আদৌ কিছু ব্যাখ্যা করতে হলে, ইবাদতই সর্বাগ্রে আসবে।
3. O ye who believe! raise not your voices above the voice of the Prophet, nor speak aloud to him in talk, as ye may speak aloud to one another, lest your deeds become vain and ye perceive not. [49:2]
এখানে আল্লাহ বলেছেন যে, রাসূলের (সা.)-এর কথার উপর কথা বললে [যার ভিতর ভিন্ন মত পোষণও আসবে] আমাদের আমল বরবাদ হয়ে যেতে পারে।
4. Those are limits set by Allah; those who obey Allah and His Messenger will be admitted to Gardens with rivers flowing beneath, to abide therein (forever) and that will be the Supreme achievement. [4:13]
5. O ye who believe! obey Allah, and obey the Messenger, and those charged with authority among you. If ye differ in anything among yourselves, refer it to Allah and His Messenger, if ye do believe in Allah and the Last Day: that is best, and most suitable for final determination. [4:59]
এখানেও সকল বিষয় ফয়সালার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছে নিয়ে যাওয়টাকে ঈমানের শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসলামকে ভিতর থেকে ধ্বংস করতে চাওয়া মুসলিম বেশী যিন্দিকগণ ছাড়া, কারো বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে, এখানে আল্লাহর কাছে নিয়ে যাওয়া বলতে কুর’আনের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং রাসূলের (সা.) কাছে নিয়ে যাওয়া বলতে তাঁর হাদীস তথা সুন্নাহর কাছে নিয়ে যাওয়া বোঝানো হয়েছে!!
6. Ye have indeed in the Messenger of Allah a beautiful pattern (of conduct) for any one whose hope is in Allah and the Final Day, and who engages much in the praise of Allah. [33:21]
উপরের আয়াতে রাসূল(সা.)-কে মডেল মনে করাটাকে ঈমানের শর্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে! আর যে সব ব্যাপারে তিনি মডেল হবেন, স্বাভাবিকভাবে তার ভিতর ইবাদতই আসবে সর্বাগ্রে।
7. But no, by thy Lord, they can have no (real) Faith, until they make thee judge in all disputes between them, and find in their souls no resistance against thy decisions, but accept them with the fullest conviction. [4:65]
এখানেও তাঁকে সকল বিষয়ে বিচারক সাব্যস্থ করাটাকে ঈমানের শর্ত করা হয়েছে!
8. All who obey Allah and the Messenger are in the Company of those on whom is the Grace of Allah, of the Prophets (who teach), the sincere (lovers of Truth), the witnesses (who testify), and the righteous (who do good): ah! what a beautiful Fellowship! [4:69]
9. Say: “Obey Allah, and obey the Messenger: but if ye turn away, he is only responsible for the duty placed on him and ye for that placed on you. If ye obey him, ye shall be on right guidance. The Messenger’s duty is only to preach the clear (Message). [24:54]
10. O ye who believe! obey Allah, and obey the Messenger, and make not vain your deeds! [47:33]
এখানে আল্লাহকে এবং তাঁর সাথে রাসূলকে (সা.) না মানলে আমল বরবাদ হবার কথা বলা হয়েছে।
11. What Allah has bestowed on His Messenger (and taken away) from the people of the townships, belongs to Allah, to His Messenger and to kindred and orphans, the needy and the wayfarer; in order that it may not (merely) make a circuit between the wealthy among you. So take what the Messenger assigns to you, and deny yourselves that which he withholds from you. And fear Allah; for Allah is strict in Punishment. [59:7]
12. Deem not the summons of the Messenger among yourselves like the summons of one of you to another: Allah doth know those of you who slip away under shelter of some excuse: then let those beware who withstand the Messenger’s order, lest some trial befall them, or a grievous Penalty be inflicted on them. [24:63]
এখানে রাসূলকে (সা.) অবজ্ঞা করলে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
13. Obey Allah, and obey the Messenger, and beware (of evil): if ye do turn back, know ye that it is Our Messenger’s duty to proclaim (the Message) in the clearest manner. [5:92]
সবেশষে “যিন্দিকদের” জন্য একটা শক্ত আয়াত উল্লেখ করছি, যেখানে রাসূলের (সা.)-এঁর প্রতি আনুগত্যকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে:
He who obeys the Messenger, obeys Allah; but if any turn away, We have not sent thee to watch over their (evil deeds). [4:80]
এই স্ট্যাটাসটা সৃষ্টিতে কেবল একজন মানুষকে দেয়া হয়েছে।
এসবেও যদি “কুর’আন অনলিদের” না হয়, তবে বুঝতে হবে তারা জেগেই ঘুমাচ্ছে। কিছুতেই কোন “দলিল” গ্রহণ করতে তারা রাজী নয় – বরং তাদের কথা হচ্ছে: my way or no way!
পাঠক সুন্নাহর অপরিহার্যতা সম্বন্ধে আরো জানতে পড়ুন:
এহইয়াউস সুনান
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
সহযোগী অধ্যাপক, আল-হাদীস বিভাগ,
ইসলামী বিশ্বিবদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা।
ফোন: ৯০০৯৭৩৮
সবশেষে একটা হাদীসের বক্তব্য দিয়ে শেষ করছি যেখানে বলা হেয়েছ যে, “কেউ যাকে ভালোবাসবে, ক্বিয়ামতের দিন তার সাথেই সে থাকবে।”
আমি প্রাণপনে দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাকে রাসূল(সা.)-এঁর সাথে রাখেন। আপনারা কার সাথে থাকতে চান? নিও-মুতাযিলা ও “কুর’আন অনলিদের” সাথে? (নাউযুবিল্লাহ্!)। নিশ্চয়ই না! আল্লাহ্ আমাদের সকলকে তাদের ও তাদের নেপথ্য প্রভুদের খপ্পর থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমীন!!