প্রশ্নঃ কবর স্থান ভেঙ্গে যদি কেউ বসববাস করার জন্য বাড়ী নির্মান করে তাহলে শরীয়তে তার বিধান কি?
প্রশ্নঃ কবর স্থান ভেঙ্গে যদি কেউ বসববাস করার জন্য বাড়ী নির্মান করে তাহলে শরীয়তে তার বিধান কি?
উত্তর দিয়েছেন ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ
উত্তরঃ প্রথম কথা হচ্ছে কবরস্থানটি যদি ওয়াফকৃত না হয়ে থাকে, ব্যক্তিমালিকানাধীন থেকে থাকে এবং এখানে যদি বর্তমানে কবর দেয়া না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কবরস্থানকে যদি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয় অথবা কবরস্থানকে যদি উঠিয়ে অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর করা হয় তাহলে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করা, দোকানপাট নির্মাণ করা, মার্কেট নির্মাণ করা অথবা অন্য কোনো কাজ করা সম্পূর্ণ জায়েয। এতে কোনো অসুবিধে নেই।
২য় মাস’আলা হচ্ছে, কবরস্থানটি যদি কবরস্থান হিসেবে ওয়াকফ করা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াকফ হওয়ার কারণে এখানে বাড়ি নির্মাণ করা, দোকানপাট নির্মাণ করা বা অন্য কোনো কাজ করা জায়েয নেই যেহেতু এটিকে কবরের জন্য বা কবর দেয়ার জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে।
৩য় মাস’আলাটা হচ্ছে কবরস্থান ওয়াকফ করা হয়েছে কিনা সেটাও জানা নেই, ব্যক্তিমালিকানায় কিনা সেটাও জানা নেই কিন্তু সেটাকে বর্তমানে কবরস্থান হিসেবে ধরা হয় না এবং এটা বর্তমানে ধরতে গেলে ছাড়া বাড়ির মতো; সেখানে কবরও দেয়া হয়না আর সেটি কবরস্থান হিসেবেও ব্যবহার হয়না অর্থাৎ এমনিই পড়ে আছে। হয়তো অনেক আগে অথবা প্রাচীন যুগে এখানে কবর দেয়া হয়েছে। যদি এমনটি হয় তাহলে সেখানে বিধান হচ্ছে, কবরস্থান খুঁড়ে ফেলা এবং সেখানে লাশ বা অন্যকিছু পাওয়া গেলে সেটি অন্যস্থানে দাফন করতে হবে এবং এই জায়গাটুকু খাস জায়গা হিসেবে কারো ব্যক্তিমালিকানা যদি সেখানে প্রমাণিত হয় তাহলে সেটাকে তিনি ভেঙ্গে অন্য কাজে লাগাতে পারবেন এবং তার জন্য এটি বৈধ রয়েছে। অর্থাৎ ঐ কবরস্থানকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া ইসলামী শরিয়তে নাজায়েয নয় বরং জায়েয রয়েছে।
আমরা জানি আল্লাহর নবী ﷺ মসজিদে নববী ﷺ যেখানে নির্মাণ করেছেন সেই স্থানটি মূলত একসময় কবরস্থান ছিল। কবরগুলো একসময় উপড়ে ফেলা হয়েছে তারপর রাসূলুল্লাহ্ ﷺ সেখানে মদীনার মসজিদটি তৈরি করেছেন। সুতরাং, কবরগুলো উপড়ে ফেলার পর যদি সেখানে অন্য কিছু করার সুযোগ থাকে তাহলে সেটাও নাজায়েয নয়, জায়েয রয়েছে। তবে ওয়াফকের বিষয়টি সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে। যদি ওয়াফকৃত হয় কবরস্থানের জন্য তাহলে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করা বা অন্য কোনো কাজ করা জায়েয নেই।