السلام عليكم ورحمة الله و بركاته

আমরা সবাই, পৃথিবীর এই সীমিত জীবনে, সব সময়ই কাউকে না কাউকে ভালোবাসি। সময়ের যে কোন একটা cross section-এ এমন কেউ থাকে, যাকে আমরা মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি – তা বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে এমনকি কোন বন্ধুও হতে পারে। এই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে নানাভাবে। আমরা ছেলেবেলায় দেখেছি, মা ঘরের কাজের বুয়াকে খুব স্পেশাল মজাদার কোন খাবার দিলে, সে তা না খেয়ে তুলে রেখে দিচ্ছে তার ছোট্ট বাচ্চাটার জন্য – কি selfless স্নেহ তাই না। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় ঐ মা (গল্পের বুয়া) তার বাচ্চার জন্য স…ব করতে পারে। ধরুন ঐ মা যদি জানে যে, কোন কারণবশত তার ঐ সন্তানের দেহ আগুনে পোড়ানো হবে এবং তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুড়ে ছাই হবে, তাহলে কি সে বসে থাকবে? নিশ্চয়ই না! সন্তানকে আগুন থেকে বাঁচাতে সে সর্বস্ব নিয়োগ করবে। এখন আর তার কাছে সন্তানকে মজাদার খাবার খাওয়ানোটা আদরের সর্বোচ্চ কর্তব্য বলে মনে হবে না – বরং, আগুন থেকে তাকে বাঁচানোটাই আদরের দাবী মেটানোর সবচেয়ে বড় কাজ বা কর্তব্য মনে হবে।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা! প্রতিটি মুসিলমের কাছে আল্লাহ্ সত্য, আল্লাহর কালাম বা কুর’আন সত্য, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য, আল্লাহর পুরস্কারের অঙ্গীকার সত্য, তাঁর শাস্তির ঘোষণা সত্য।
কুর’আনে আল্লাহ্ বলেছেন জাহান্নামের আগুনের জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। আরো বলেছেন যে নিজেকে এবং নিজের পরিবারবর্গকে আমরা যেন সেই আগুন থেকে বাঁচাই। জেনে রাখুন আপনার সবচেয়ে বড় well wisher হচ্ছে সেই, যে আপনাকে ঐ আগুন থেকে রক্ষা করতে পরামর্শ দেয় এবং আল্লাহর দিকে আহবান করে। সেই আগুন থেকে রক্ষা পাবার প্রথম step হচ্ছে আপনার বিশ্বাসকে পরিশুদ্ধ করা যাতে আপনার সকল “আমল” বরবাদ না হয়ে যায়। আর সেজন্যই আমরা বিশ্বাসের পয়েন্ট নিয়ে এত serious । আসুন তাহলে “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়ার” পরবর্তী কয়েকটি পয়েন্ট দেখি আমরা:

৩৬। একজন মানুষের ইসলাম ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না তা আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের উপর ভিত্তি করে না হয়, যে কেউই তার সাধ্যের বাইরের কিছু জানতে চাইবে, এবং যার বুদ্ধিবৃত্তি আত্মসমর্পণ করে তৃপ্ত হবে না, তার জানার আকাঙ্খা আল্লাহর সত্যিকার একত্ববাদ, সুস্পষ্ট জ্ঞান এবং সঠিক বিশ্বাস বিশুদ্ধ ভাবে বোঝা থেকে তাকে পর্দাবৃত রাখবে, এবং সে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মাঝে, নিশ্চয়তা এবং প্রত্যাখ্যানের মাঝে এবং গ্রহণ ও বর্জনের মাঝে দিক পরিবর্তন করবে। সে ওয়াসওয়াসায় কান দেবে এবং নিজেকে বিভ্রান্ত এবং সন্দেহে পতিত দেখতে পাবে, না হতে পারবে একজন গ্রহণোন্মুখ বিশ্বাসী বা না হবে প্রত্যাখ্যানকারী অবিশ্বাসী।
৩৭। ‘জান্নাতের বাসিন্দাগণ কর্তৃক আল্লাহকে দেখা’—এই বিশ্বাস সঠিক হবে না যদি কেউ এটা কেমন হতে পারে সেই কল্পনা করে অথবা নিজের বুদ্ধিবিবেচনা অনুসারে এর ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করে। কারণ এই দর্শনের ব্যাখ্যা অথবা প্রভুত্বের জগতে যে কোন ইন্দ্রিয়াতীত ঘটনার অর্থের জন্য ব্যাখ্যাকে এড়িয়ে কঠোরভাবে আনুগত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে। ‘এটাই হচ্ছে মুসলিমদের দ্বীন। যে আল্লাহর গুণাবলী অস্বীকার করা থেকে নিজেকে হেফাজত করবে না, অথবা আল্লাহকে অন্য কিছুর মত ভালবাসবে, সে ধ্বংস হয়েছে এবং আল্লাহর মহিমা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ আমাদের রব, যিনি প্রশংসিত এবং সুমহান, সম্ভবত একত্ব এবং পরম এককত্ব এই শব্দ সমূহের মাধ্যমেই বর্ণিত হতে পারেন এবং কোন সৃষ্টিই কোনভাবেই তাঁর মত নয়।
৩৮। তিনি তাঁর উপর কোন সীমা আরোপের বাইরে, বা কোন বাধা বা সংকীর্ণতার অথবা অংশ বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থাকার বাইরে – না তিনি সমস্ত সৃষ্টির মত ছয়দিকের সীমায় আবদ্ধ।
৩৯। আল-মি’রাজ (ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ) সত্য। নবী (সা.) রাত্রিবেলা, সশরীরে, সচেতনভাবে মহাজগতে/ আকাশমণ্ডলীতে আল্লাহ যতটুকু চেয়েছেন ততটুকু উচ্চতায় আরোহণ করেছেন। আল্লাহ তাঁকে মহিমান্বিত/ গৌরবান্বিত করেছেন যেভাবে তিনি তাকে গৌরবান্বিত করেছেন এবং তার কাছে নাজিল করেছেন, যা তিনি নাজিল করেছেন, ‘এবং তার অন্তর ভুল করেনি যা সে দেখেছে’ (আন-নাজম ৫৩:১১)। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করেছেন এবং তাঁকে দুনিয়ায় ও আখিরাতে শান্তি দিয়েছেন।
৪০। আল হাউজ, (সেই পানির নহর যা আল্লাহ নবীকে সম্মান হিসাবে দান করেছেন, যা থেকে তাঁর উম্মত শেষ বিচারের দিনে তৃষ্ণা মিটাবে) সত্য।

আল্লাহ্ হাফিজ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *