উল্টো অগ্রাধিকার
السلام عليكم ورحمة الله و بركاته
আমরা যারা ঝুকিপূর্ণ পেশার সাথে জড়িত, তারা জানি যে, একটা critical moment-এ অগ্রাধিকার ঠিক করাটা কত গুরুত্বপূর্ণ। একবার একটা বিমান দুঘর্টনার গল্প পড়েছিলাম। ল্যান্ডিং-এর ঠিক আগে আগে ককপিটে কর্মরতদের একজন খেয়াল করলেন যে, বিমানের “nose light”টা জ্বলছে না। একে একে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন nose light জ্বালানোর চেষ্টা করতে। কেউ altimeter খেয়াল করলেন না। ব্ল্যাক-বক্স থেকে জানা গিয়েছিল যে, কেউ একজন যখন চিৎকার করে বললেন যে, উচ্চতা খুব বিপজ্জনকভাবে কমে গিয়েছে – তখন আর কিছুই করার ছিল না। অথচ, একটা nose light ছাড়া বিমানখানি অনায়াসে অবতরণ করতে পারতো! অগ্রাধিকার ঠিক করতে ভুল করলে, মারাত্মক মূল্য দিতে হতে পারে।
মুসলিম হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার তাহলে কি হবে? আমি জানি, এই ব্লগের ভাইবোনদেরও এই প্রশ্নটা যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তবে বহু ধরনের উত্তর পাওয়া যাবে। এই অগ্রধিকার ঠিক করতে না পারাটা, আমাদের বহু ধারায় বিভক্তির একটা অন্যতম প্রধান কারণ।
আমার নিজের জীবনে, আমি এই অগ্রধিকারের ব্যাপারে বহু বার বহু বিভ্রান্তির শিকার হয়েছি। পরে জেনেছি এবং বুঝেছি যে, অগ্রাধিকার ঠিক করতে না পারার একটা মূল কারণ হচ্ছে আমাদের জ্ঞনের অভাব – এই বাস্তবতা যে, আমরা প্রায় কেউই methodically বা পদ্ধতি অনুসরণ করে “দ্বীন” শিক্ষা করি না। আমরা মনে করি আমরা তো “প্রয়োজনীয়” বিষয়গুলো সব জানিই! প্রথমত, আমরা প্রায় সবাই জন্মগত বা পৈতৃক সূত্রে মুসলিম – জেনে-বুঝে-পড়ে মুসলিম নই। সেজন্য বাপ-দাদার অজ্ঞতা ও ভুল ধারণাগলোও আমরা inherit করি বা বংশানুক্রমে বহন করে চলি।
দ্বিতীয়ত, আমাদের মা-বাবারা আমাদের “দ্বীন শিক্ষা” দান করার নামে যা আয়োজন করে থাকেন, সেটাকে “নামাজ-রোজা ও কুর’আন পাঠ” শিক্ষা বললে যথাযথ হতো! এই প্রক্রিয়ায় “জ্ঞান অর্জন ফরজ” এই কথাটা জানা থাকলেও, তার কোন প্রভাব দেখা যায় না। আসলে জ্ঞান অর্জন ফরজ বলতে কি বোঝায়, সে সম্বন্ধেও প্রায় শতভাগ অভিভাবকেরই কোন ধারণা নেই বললেই চলে। “বিদ্যা শিক্ষার জন্য প্রয়োজনে চীন যাওয়ার” জাল হাদীস উদ্ধৃত করে তারা তাদের ছেলেমেয়েদের জীবনের “মূষিক দৌড়ে” অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে করতে হয়তো এটাও বোঝাতে চান যে সুদ ভিত্তিক ব্যবসায় পারদর্শী হবার জন্য BBA/MBA পড়া থেকে শুরু করে JAVASCRIPT বা VISUAL BASIC শেখার মত সবকিছুই এই “ফরজের” আওতায় পড়ে। কিন্তু আসলে কি তাই? চলুন আমরা ভেবে দেখি আল্লাহয় ও আখেরাতে বিশ্বাসী হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকারের ক্রম কি হওয়া উচিত!
আল্লাহ্ হাফিজ!